শীতকালিন পিঠা

কুড়িগ্রামের শীতকালীন পিঠা।

শীতকাল মানেই কুড়িগ্রাম জেলার হাট-বাজারে এক অন্যরকম আমেজ। এই সময়ে গ্রামীণ জীবনের রূপটা যেন পাল্টে যায়। ঠাণ্ডা হাওয়া আর রোদের মিশ্রনে শুরু হয় পিঠা তৈরির ধুম। কুড়িগ্রামের প্রতিটি বাজারে শীতকালীন পিঠা উৎসবমুখর পরিবেশে বিক্রি করা হয়, যা স্থানীয়দের পাশাপাশি বহিরাগত পর্যটকদেরও আকর্ষণ করে।

পিঠার ঐতিহ্য এবং বৈচিত্র্য

গ্রামিন পিঠা

কুড়িগ্রামের পিঠা শুধু মাত্র খাবারের নাম নয়, এটি এখানকার মানুষের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের অংশ। প্রতিদিন শীতের সকালে বাড়ির উঠোনে চুলা জ্বলে, আর তার পাশে বসে বাড়ির মহিলারা তৈরি করেন নানা রকম পিঠা। যেমন:

ভাপা পিঠা: নরম এবং মিষ্টি স্বাদের এই পিঠা শীতের সকালের জন্য আদর্শ একটা পিঠা।

চিতই পিঠা: চালের গুড়া এবং গুর দিয়ে তৈরি এই পিঠা শরসে বাটা দিয়ে খেতে সবারই খুব প্রিয়।

পুলি পিঠা: খেজুরের গুড়ের সঙ্গে দুধ এবং নারকেলের মিশ্রণে তৈরি এই পিঠার স্বাদ অতুলনীয়।

পাটিসাপটা: তিল এবং গুড়ের সমন্বয়ে তৈরি এই পিঠা শীতের সন্ধ্যায় চায়ের সঙ্গে কিংবা বাজারে দোকানের আড্ডায় বেশ চলে।

বাজারের উৎসবমুখর পরিবেশ

পিঠা উৎসব
কুড়িগ্রামের প্রতিটি হাট-বাজারে শীতকালে পিঠার দোকান রুপে উৎসবমুখোর মেলা বসে। স্থানীয় পুরুষ-মহিলারা তাদের তৈরি পিঠা সাজিয়ে বসেন। ক্রেতাদের কলরব এবং বিক্রেতাদের হাসি-ঠাট্টায় মুহুর্তেই বাজার হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। বিশেষ করে রৌমারী, উলিপুর, চিলমারী, কুড়িগ্রাম সদর এবং ফুলবাড়ির বাজার গুলোতে পিঠার চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি।

পিঠার গুণগত মান

কুড়িগ্রামের স্থানিয় পিঠার সবচেয়ে বড় গুণ হলো এর প্রাকৃতিক উপাদান। এখানে ব্যবহৃত খেজুরের গুড়, নারকেল, তিল, এবং চাল সবই প্রাকৃতিক ভাবে উৎপাদিত। কোনো রাসায়নিক বা প্রিজারভেটিভ ছাড়াই তৈরি করা এই পিঠা স্বাস্থ্যের জন্যও যেমন উপকারি, খেতেও তেমন স্বাদ। তাই হয়তো এখানকার মানুষ এর কাছে পিঠার যেমন কদর তেমনি বহিরাগত মানুষের কাছের কুড়িগ্রাম এর শীতকালিন পিঠার নাম ডাক রয়েছে।

শেষ কথা

কুড়িগ্রামের শীতকালীন পিঠা শুধু মাত্র মানুষের মুখের স্বাদই মেটায় না, এটি এখানকার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যেরও অংশ। শীতের সকাল-বিকালে কুড়িগ্রামের বাজারে গেলে আপনি পেয়ে যাবেন উৎসবের আমেজ এবং পিঠার মিষ্টি স্বাদ। তাই শীতকালে কুড়িগ্রাম ভ্রমণের প্ল্যান করে থাকলে এই পিঠার স্বাদ নিতে ভুলবেন না যেন!

কুড়িগ্রামে শীতকালীন পিঠা প্রতিটি বাজারে উৎসবমুখর ভাবে বিক্রয় করা হয়, এবং এই পিঠা এখানকার মানুষের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।

Related Post