
উলিপুর মুন্সিবাড়ী
- by Touhid
- Tourist Places
- 1 year ago
- 562 views
বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলায় অবস্থিত উলিপুর মুন্সিবাড়ী ঐতিহাসিক স্থাপত্যের এক অপূর্ব নিদর্শন। উনিশ শতকের প্রথম দিকে নির্মিত এই মুন্সিবাড়ী তার অনন্য স্থাপত্যশৈলী, ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য পরিচিত।
Table of Contents
অবস্থান
ইতিহাস
মুন্সিবাড়ীর নির্মাণ শুরু হয় উনিশ শতকের প্রথম দিকে। বিনোদী লাল মুন্সি, কাশিম বাজারের জমিদার স্বর্ণময়ী দেবীর অধীনে হিসাব রক্ষকের কাজ করতেন। কথিত আছে, একদিন শিকার করতে গিয়ে তিনি একটি ব্যাঙের সাপ ধরে খাওয়ার দৃশ্য দেখতে পান। তৎকালীন বিশ্বাস অনুসারে, যেখানে ব্যাঙ সাপ ধরে খায়, সেখানে বাড়ি তৈরি করলে অনেক ধন সম্পত্তির মালিক হওয়া যায়।
এই বিশ্বাসে বিনোদী লাল জমিদারের কাছে অনুমতি নিয়ে ধরণীবাড়ীতে বাড়ি নির্মাণ শুরু করেন। পরবর্তীতে, বিনোদী লালের পালক পুত্র ব্রজেন্দ্র লাল মুন্সি উনিশ শতকের মধ্যভাগে বর্তমান অট্টালিকাটি নির্মাণ করেন।ব্রজেন্দ্র লাল মুন্সির স্ত্রী আশালতা মুন্সি দুই কন্যা সন্তান জন্ম দেন। বড় মেয়ে সুচি রাণীর বিয়ে কলকাতায় আড়ম্বরের সাথে সম্পন্ন হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুন্সি পরিবার কলকাতায় চলে যান।
মুন্সিবাড়ীর নির্মাণকাল ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দ বলে ধারণা করা হয়। মুন্সিবাড়ীটি মোঘল ও ব্রিটিশ স্থাপত্যশৈলীর এক অপূর্ব মিশ্রণ। মুন্সিবাড়ীর প্রথম তলায় তিনটি বড় কক্ষ রয়েছে। দ্বিতল অট্রালিকাটিতে বেশ কয়েকটি মন্দির রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মুন্সিবাড়ীটি মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। পাক হানাদার বাহিনী মুন্সিবাড়ীতে আক্রমণ করে বেশ কিছু ক্ষতি করে।
স্থাপত্য
মুন্সিবাড়ীর স্থাপত্য বেশ চমৎকার। মূল ভবনে শয়নকক্ষ, ডাইনিং হল, রান্নাঘর, অঙ্কন কক্ষ, বিশ্রাম ঘর এবং অতিথিশালা রয়েছে। মূল বাড়ির পিছনে শিব মন্দির, উন্মুক্ত দোল মঞ্চ, তুলসি বেদী, নাট মন্দির, দূর্গা মন্দির ও কূপসহ স্নানাগার রয়েছে। মূল ফটকের পাশে কাঁঠালি চাপা ফুলের গাছ এবং শান বাঁধানো পুকুর ঘাট দেখা যায়।
বর্তমান অবস্থা
যথাযথ সংস্কারের অভাবে মুন্সিবাড়ীর বর্তমান অবস্থা বেশ বেহাল। বৃষ্টি হলেই ছাদ চুয়ে চুয়ে কক্ষ ও বারান্দা বৃষ্টির পানি দিয়ে ভরে যায়। দীর্ঘদিনের অবহেলায় মন্দিরগুলো, বিছানা ঘর, ডাইনিং হল, রান্নাঘর, অঙ্কন কক্ষ, উপরের তলার বিশ্রাম ঘর ও বাথ রুম অনেকটা নষ্ট হয়ে গেছে।
কিভাবে যাবেন?
ঢাকার আসাদগেট, কল্যাণপুর বা গাবতলি থেকে নাবিল, হক স্পেশাল, হানিফ, তানজিলা এবং এনা পরিবহণের বাসে কুড়িগ্রাম যাওয়া যায়।
কুড়িগ্রাম শহর পৌঁছে লোকাল ইজিবাইক বা সিএনজি নিয়ে উলিপুর উপজেলার ধরণীবাড়ী ইউনিয়নের উলিপুর বাজার হয়ে মুন্সিবাড়ী আসতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন?
কুড়িগ্রাম শহরের ঘোষপাড়া ও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের কাছে বিভিন্ন মানের বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল আছে।
হোটেল অর্নব প্যালেস, হোটেল ডিকে, হোটেল স্মৃতি, হোটেল নিবেদিকা ও হোটেল মেহেদী উল্লেখযোগ্য।
Related Listing
মোগলবাসা ভাটলার সুইচগেট
- 1 year ago
- Tourist Places
টগরাইহাটের অচিন গাছ
- 1 year ago
- Tourist Places
ভেতরবন্দ জমিদার বাড়ি
- 1 year ago
- Tourist Places