Bhurungamari Upazila

 কুড়িগ্রাম জেলার যে ৯টি উপজেলা রয়েছে তাদের মধ্যে ভূরুঙ্গামারী অন্যতম ।  এখানে বিভিন্ন ধরনের দর্শনীয় স্থান এবং অন্যান্য সকল পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে।  তাহলে চলুন নিচে উপজেলা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানি।

উপজেলা পরিচিতি

অবস্থান ও আয়তন

ভূরুঙ্গামারী উপজেলাটি কুড়িগ্রাম জেলার উত্তরপূর্ব দিকে অবস্থিত। এ উপজেলার উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং আসাম; দক্ষিণে নাগেশ্বরী উপজেলা, পূর্বে ভারতের আসাম, পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ।

জনসংখ্যার উপাত্ত

  • জনসংখ্যা: মোট: ২৫৮৪৪০ জন, পুরুষ- ১৩২৪৪০ জন, মহিলা- ১২৬০০০ জন
  • ভোটার সংখ্যা: মোট -১৮০৯৭৯ জন, পুরুষ- ৮৭৯৮৮ জন, মহিলা- ৯২৯৯১ জন

প্রশাসন সংক্রান্ত তথ্য

সংসদীয় এলাকার সংখ্যা:

এটি কুড়িগ্রাম – ১ সংসদীয় এলাকার অধীন; যা নাগেশ্বরী এবং ভূরুঙ্গামারী নিয়ে গঠিত।

ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা:

মোট ১০ টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে ।

  1. পাথরডুবি,
  2. শিলখুড়ি,
  3. তিলাই,
  4. পাইকেরছড়া,
  5. ভূরুঙ্গামারী,
  6. জয়মনিরহাট,
  7. আন্ধারীঝাড়,
  8. বলদিয়া ইউনিয়ন,
  9. চরভূরুঙ্গামারী,
  10. বঙ্গসোনাহাট

গ্রামের সংখ্যা:

 ভূরুঙ্গামারী উপজেলাতে ১২৮টি গ্রাম রয়েছে।

শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্য

 এখানে রয়েছে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত নানা প্রতিষ্ঠান, যা গড়ে তুলছে জ্ঞানপিপাসু নতুন প্রজন্ম। 

  • শিক্ষার হার: ৩৯.০৬% (২০২০)
  • কলেজ: ৫টি (সরকারি কলেজ ১টি)
  • বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ৩৪টি
  • বালিকা বিদ্যালয়: ৫টি
  • জুনিয়র হাইস্কুল: ৩ টি
  • ইবতেদায়ী মাদ্রাসা: ১৯টি
  • সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: ১১২টি
  • বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: ১টি
  • কিন্ডারগার্টেন:৩৭ টি

অর্থনীতি সংক্রান্ত তথ্য

মূলত কৃষি নির্ভর অর্থনীতি। তবে ব্যাবসার দিক থেকেও ভূরুঙ্গামারী এখন বেশ এগিয়ে রয়েছে। দু-একটি করে কারখানা স্থাপন শুরু হয়েছে। এছাড়াও বঙ্গ সোনাহাটে স্থলবন্দর হওয়াতে ইমপোর্ট ও এক্সপোর্টের ব্যাবসায় বেশ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

যোগাযোগ ব্যবস্থা

ভূরুঙ্গামারীর যোগাযোগ ব্যাবস্থা বেশ ভালো। এখানে বেশিরভাগ রাস্তা গুলো পাকা করা হয়েছে। আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা পাকা করা বাকি আছে। তবে এখানে সাইকেল, মোটরসাইকেল, রিক্সা, অটোরিক্সা, কার ইত্যাদির মাধ্যমে চলাচল করা হয়। ভূরুঙ্গামারী থেকে বাইরে যাওয়ার জন্য কার, মাইক্রোবাস, বাস, কোচ ইত্যাদি ব্যাবহার করা হয়

দর্শনীয় স্থান সমূহের তালিকা

ভূরুঙ্গামারী উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ইতিহাস এবং সংস্কৃতি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। উপজেলায় রয়েছে বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় পর্যটন ও সাংস্কৃতিক স্থান।

পাটেশ্বরী/সোনাহাট ব্রিজ

পাটেশ্বরী/সোনাহাট ব্রিজ উপজেলার একটি অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থান। ব্রিজটি ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর অবস্থিত এবং এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম সেতু। ব্রিজটি থেকে ব্রহ্মপুত্র নদের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করা যায়।

মীর জুমলা প্রাচীন মসজিদ

মীর জুমলা প্রাচীন মসজিদ উপজেলার একটি অন্যতম ঐতিহাসিক নিদর্শন। মসজিদটি ১৬শ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন মসজিদগুলির মধ্যে একটি। মসজিদটি তার সুন্দর স্থাপত্যশৈলীর জন্য বিখ্যাত।

সোনাহাট স্থলবন্দর

সোনাহাট স্থলবন্দর উপজেলার একটি অন্যতম অর্থনৈতিক কেন্দ্র। স্থলবন্দরটি বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দরগুলির মধ্যে একটি। স্থলবন্দরটি থেকে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়।

মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর বাড়ি

মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন বাংলাদেশের একজন বিখ্যাত ধর্মীয় ও রাজনৈতিক নেতা। তাঁর বাড়ি উপজেলার একটি অন্যতম ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক স্থান।

১৯৬৫ সালের ভুরুঙ্গামারীতে কৃষক সন্মেলনকে কেন্দ্র করে তিন মাস এই বাড়িতে ছিলেন ভাসানী।

এছাড়াও এই বাড়িতে এসেছেন হাজী দানেশ, মশিউর রহমান যাদু মিয়া, রাশেদ খান মেনন, শামসুল হক চৌধুরীসহ অনেক নেতা।

এই বাড়িকে ঘিরেই ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান ও ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে সংগঠিত হয়।

১৯৭৬ সালে সর্বশেষ সীমান্ত সফরে এসে মাওলানা ভাসানী এই বাড়িতে এসেছিলেন।

জয়মনিরহাট জমিদার বাড়ি

জয়মনিরহাট জমিদার বাড়ি উপজেলার একটি অন্যতম ঐতিহাসিক নিদর্শন। জমিদার বাড়িটি ১৯শ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি উপজেলার অন্যতম সুন্দর স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন।

বাগভান্ডার স্লুইস গেইট

বাগভান্ডার স্লুইস গেইট উপজেলার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো। স্লুইস গেইটটি ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত হয়েছে এবং এটি নদীর জলপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।