ওলিপুর উপজেলা কুড়িগ্রামের অন্যতম একটি প্রশাসনিক এলাকা । এটি দেশের বৃহৎ উপজেলা সমূহের মধ্যে একটি। উলিপুর উপজেলা ঐতিহাসিক গুরুত্ব, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ক্রমবর্ধমান উন্নয়নের সমন্বয়ে গঠিত।
উপজেলা পরিচিতি
উলিপুর উপজেলার ইতিহাস, প্রকৃতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে এটি সমৃদ্ধ।
অবস্থান ও আয়তন
কুড়িগ্রাম জেলা সদর হতে ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে উলিপুর উপজেলার অবস্থান। এ উপজেলার উত্তরে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা ও রাজারহাট উপজেলা, দক্ষিণে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ও চিলমারী উপজেলা, পূর্বে রৌমারী উপজেলা ও ভারতের আসাম, পশ্চিমে রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলা ও গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা।
উলিপুর উপজেলার আয়তন ৫০৪.১৯ বর্গ কিলোমিটার।
জনসংখ্যার উপাত্ত
২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী উলিপুর উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৪,১০,৮৯০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১,৯৮,৬২৫ জন ও মহিলা ২,১২,২৬৫ জন।
প্রশাসন সংক্রান্ত তথ্য
উলিপুর উপজেলায় রয়েছে একটি পৌরসভা, ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদ, ১৪৭টি মৌজা এবং ৩৫৮টি গ্রাম। এ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম উলিপুর থানাধীন।
সংসদীয় এলাকার সংখ্যা:
১টি এলাকা রয়েছে । নাম ও এলাকা: কুড়িগ্রাম– ৩ (উলিপুর)
পৌরসভার সংখ্যা:
১টি মাত্র পৌরসভা রয়েছে । সেটি হলো উলিপুর পৌরসভা ।
ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা:
মোট ১৩ টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে ।
দূর্গাপুর
বেগমগঞ্জ
বুড়াবুড়ি
বজরা
দলদলিয়া
ধামশ্রেণী
ধড়নিবাড়ি
গুনাইগাছ ইউনিয়ন
হাতিয়া
পান্ডুল
সাহেবের আলগা
তবকপুর
থেতরাই
গ্রামের সংখ্যা:
উলিপুর উপজেলায় মোট ৩৫৮টি গ্রাম রয়েছে
শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্য
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী উলিপুর উপজেলার সাক্ষরতার হার ৫৫.৪০% (পুরুষ ৫৮.৪৫%, মহিলা ৫৩.৯১%)। এ উপজেলায় ৮টি কলেজ (১টি সরকারি কলেজ), ৬২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় (১টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়), ২৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়), ৫৫টি মাদ্রাসা (৪০টি দাখিল, ৬টি আলিম, ৮টি ফাজিল ও ১টি কামিল মাদ্রাসা) রয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
কলেজ
উলিপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৪)
উলিপুর মহিলা মহাবিদ্যালয় (১৯৮৬)
পাঁচপীর ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৭)
মন্ডলেরহাট মহাবিদ্যালয় (২০০০)
এমএ মতিন কারিগরী ও কৃষি কলেজ (১৯৯৫)
উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল এন্ড কলেজ (১৯৯৯)
মাধ্যমিক বিদ্যালয়
উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৬৮)
বুড়াবুড়ী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৭)
মন্ডলহাট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬৫)
দুর্গাপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪)
বকশিগঞ্জ রাজিবিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৫)
উলিপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় (১৯০৯
প্রাথমিক বিদ্যালয়
উলিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯০৯)
বুড়াবুড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৮৯)
যমুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯৩৭)
দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১৪
মাদ্রাসা
সাতদরগা নেছারিয়া আলীয়া মাদ্রাসা (১৯৫২)
কামাল খামার দ্বিমুখী সিনিয়র মাদ্রাসা (১৯৫৪)
নুরেশ্বর আমীনিয়া মাদ্রাসা (১৯৫৪
অর্থনীতি সংক্রান্ত তথ্য
উলিপুরের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। তাছাড়া ওখানে ছোট ও মাঝারি ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
এখানকার লোকজনের প্রাধান পেশা হচ্ছে কৃষি কাজ। তাছাড়াও আছে চাকরিজীবী,কামার,কুমার,জেলে ইত্যাদি।
কৃষি
মোট আবাদী জমির পরিমাণঃ ২৮,২৫০ একর
অর্থকরী ফসলঃ ধান, গম, সবজি,আলু, পাঠ, আখ প্রভৃত
শিল্প
শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাঃ মোট ৭৩০টি, কুটির শিল্প- ৭৩০টি
যোগাযোগ ব্যবস্থা
পাকা রাস্তাঃ ১৮০কি. মি
কাঁচা রাস্তাঃ ৪৪৬ কি. মি
দর্শনীয় স্থান সমূহের তালিকা
উলিপুর উপজেলা তার ইতিহাস, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। এই উপজেলায় রয়েছে অসংখ্য পর্যটন ও সাংস্কৃতিক স্থান, যা পর্যটক ও দর্শনার্থীদের কাছে আকর্ষণীয়।
টুপামারী বিল
উলিপুর উপজেলার অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থান হল টুপামারী বিল। এই বিলটি তার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত। বিলের চারপাশে সবুজ মাঠ, খেজুরের বাগান ও বিশাল জলাভূমি রয়েছে। বিলে নানা প্রজাতির পাখি ও জলচর প্রাণী বাস করে।
জালার পীরের দরগাহ
উলিপুর উপজেলার জালা গ্রামে অবস্থিত জালার পীরের দরগাহটি একটি ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় স্থান। এই দরগাহটি ৭০০-৮০০ বছরের পুরনো বলে ধারণা করা হয়। দরগাহটিতে শাহ জালাল (রহ.) নামে একজন দরবেশের সমাধি রয়েছে।
সাত দরগাহ মাজার
উলিপুর উপজেলার খামারবাড়ী ইউনিয়নের সাত দরগাহ গ্রামে অবস্থিত সাত দরগাহ মাজারটি একটি ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় স্থান। এই মাজারে সাত জন দরবেশের সমাধি রয়েছে।
কাজীর মসজিদ
উলিপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাজীর মসজিদটি একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। এই মসজিদটি ১৬৫০ সালে নির্মিত হয়েছিল। মসজিদটি তার স্থাপত্যশৈলীর জন্য বিখ্যাত।
ব্রহ্মপুত্র নদ
উলিপুর উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদ। এই নদটি তার বিশালতা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। নদের দুই তীরে রয়েছে সবুজ মাঠ, খেজুরের বাগান ও গ্রামীণ জনপদ।
তিস্তা নদী
উলিপুর উপজেলার সীমান্ত দিয়ে বয়ে গেছে তিস্তা নদী। এই নদটি তার তীব্র স্রোত ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। নদের দুই তীরে রয়েছে সবুজ মাঠ, খেজুরের বাগান ও গ্রামীণ জনপদ।