চান্দামারী মসজিদ, রাজারহাট
চান্দামারী মসজিদ, রাজারহাট
চান্দামারী মসজিদ, রাজারহাট
চান্দামারী মসজিদ, রাজারহাট

চান্দামারী মসজিদ, রাজারহাট

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় অবস্থিত চান্দামারী মসজিদ প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো ইতিহাসের সাক্ষী। মোগল আমলের স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন এই মসজিদটি কালের পরিক্রমায় এখনও দাঁড়িয়ে আছে, মাথা উঁচু করে। মসজিদের সুক্ষ্ম কারুকাজ ও স্থাপত্যকৌশল দেখলেই মুগ্ধ হতে হয়।

Table of Contents

অবস্থান

ইতিহাস

রাজারহাট উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে চান্দামারী মণ্ডলপাড়া গ্রামে অবস্থিত এই মসজিদটি ঠিক কবে নির্মিত হয়েছিল, সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও, এর স্থাপত্যরীতি দেখে ধারণা করা হয় ১৫৮৪ থেকে ১৬৮০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী কোনো সময়ে এটি নির্মিত হয়েছিল।

মসজিদটি ৫২ শতক জায়গা জুড়ে রয়েছে। এর দৈর্ঘ্য ৪০ ফুট এবং প্রস্থ ২০ ফুট। নির্মাণে এক ধরনের বিশেষ আঠালো পদার্থ, যার নাম ‘ভিসকাস’, ব্যবহার করা হয়েছিল বলে জানা যায়। মসজিদের সামনের দিকে পাঁচ ফুট উঁচু তিনটি দরজা মসজিদের ঐশ্বর্যের ইঙ্গিত দেয়।

কিন্তু মসজিদের সবচেয়ে চোখ ধাঁধানো দৃশ্য হলো এর তিনটি বড় গম্বুজ। প্রতিটি গম্বুজের ব্যাস প্রায় ৫.৫০ ফুট। গম্বুজগুলোতে নান্দনিক নকশা করা আছে, যা দেখে মনে হয় যেন সময় থেমে গেছে সেখানে। চার কোণে চারটি মাঝারি আকৃতির মিনার রয়েছে এবং চারপাশে ষোলটি ছোট গম্বুজে  এই মসজিদটি যেন এক অলৌকিক সৌন্দর্যের সৃষ্টি। ভেতরে তিনটি মেহরাব এবং দেয়ালে অনেকগুলো খিলান চোখে পড়ে। বাতাস চলাচলের জন্য উত্তর ও দক্ষিণ দিকে একটি করে জানালা আছে। মসজিদের সামনে একটি বড় পুকুর মসজিদের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

চান্দামারী মসজিদ শুধু একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা নয়, এটি এখনও জীবন্ত। প্রতিদিন এখানে নামাজ আদায় করা হয়, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি দেখতে আসেন।

আসুন, কুড়িগ্রামে ঘুরতে এলে চান্দামারী মসজিদে একটু সময় কাটিয়ে ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে উঠুন। এই মসজিদ আপনাকে মুগ্ধ করবে, ইতিহাসের গল্প শোনাবে।

Chandamari mosjid

কিভাবে যাবেন?

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় অবস্থিত চান্দামারী মসজিদে যেতে হলে ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে করে কুড়িগ্রাম যেতে হবে। কুড়িগ্রাম থেকে রিকশা বা অটোরিকশায় করে মসজিদে যেতে পারবেন।

চান্দামারী মসজিদে যাওয়ার সর্বোত্তম সময় হলো শীতকাল। কারণ এই সময় আবহাওয়া মনোরম থাকে এবং ভ্রমণ করা সহজ হয়।

মসজিদে প্রবেশের জন্য কোনো টিকিট লাগে না। তবে, মসজিদের পরিচ্ছন্নতা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দান করা যেতে পারে।