Chilmari Upazila

চিলমারী উপজেলা বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। 

উপজেলা পরিচিতি

চিলমারী উপজেলা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক নিদর্শন ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। এই উপজেলাটি তার নামকরণ নিয়ে একটি কিংবদন্তি রয়েছে। ব্রিটিশ আমলে এই অঞ্চলে চিলের উপদ্রব ছিল। চিল এত বেশি ছিল যে তারা ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করতো। চিলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মানুষ চিলের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করে। জনতাও আনন্দের সাথে সে যুদ্ধ উপভোগ করতে দলে দলে আসতে থাকে, আর মুখে একটাই রব “চলো চিল মারি”। ধারনা করা হয়, এই ঘটনা থেকেই এই এলাকার নাম চিলমারী হয়েছে।

অবস্থান ও আয়তন

এর আয়তন ২২৪.৯৭ বর্গ কিলোমিটার। এ উপজেলার উত্তরে উলিপুর উপজেলা, দক্ষিণে চর রাজিবপুর উপজেলা ও গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা, পূর্বে রৌমারী উপজেলা ও চর রাজিবপুর উপজেলা, পশ্চিমে উলিপুর উপজেলা ও গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা।

জনসংখ্যার উপাত্ত

  • জনসংখ্যা: মোট ১১০৯৬০ জন, পুরুষ- ৫৪০৮৩ জন, মহিলা- ৫৬৮৭৭ জন
  • ভোটার সংখ্যা: মোট ৭৩২২৫ জন, পুরুষ-৩৬৯০৫ জন, মহিলা-৩৬৩২০ জন

প্রশাসন সংক্রান্ত তথ্য

সংসদীয় এলাকার সংখ্যা:

১টি এলাকা রয়েছে ।  নাম ও এলাকা: কুড়িগ্রাম- ৪ (চিলমারী, রৌমারী, রাজিবপুর) ।

থানা সংখ্যা:

২টি মাত্র থানা রয়েছে । সেগুলো হলো: ১.রমনা থানা ২.চিলমারী থানা । 

ইউনিয়ন পরিষদের সংখ্যা:

মোট ৬ টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে ।

  1. অষ্টমির চর ইউনিয়ন
  2. নয়ারহাট ইউনিয়ন
  3. চিলমারী ইউনিয়ন
  4. রমনা ইউনিয়ন
  5. থানাহাট ইউনিয়ন
  6. রাণীগঞ্জ ইউনিয়ন

গ্রামের সংখ্যা:

চিলমারীতে মোট ১৬০ টি গ্রাম রয়েছে 

শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্য

এই উপজেলার শিক্ষার হার শতকরা ৫০ ভাগ। অন্যান্য পরিসংখ্যান হচ্ছে:

  • কলেজ: ৩টি (সরকারি ১টি)
  • হাইস্কুল: ১১টি
  • মাদ্রাসা: ১২টি
  • সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: ৫৫টি
  • বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: ৩৫টি

অর্থনীতি সংক্রান্ত তথ্য

চিলমারীর অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর। তাছাড়া ওখানে কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান নেই

কৃষি

  • মোট আবাদী জমির পরিমাণ- ১৫০০৩ একর
  • অর্থকরী ফসল: ধান, গম, আলু, পাট,বাদাম, তামাক,ভূট্টা ইত্যাদ্দি।

শিল্প

চিলমারী বন্দর একসময় আমদানি-রপ্তানি কেন্দ্রীক প্রাচীন বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসাবে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু থাকলেও ১৯৬৫ সালে বন্ধ হয়ে যায় । 

দর্শনীয় স্থান সমূহের তালিকা

চিলমারী উপজেলা তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক নিদর্শন ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। এই উপজেলায় রয়েছে অসংখ্য পর্যটন ও সাংস্কৃতিক স্থান, যা পর্যটক ও দর্শনার্থীদের কাছে আকর্ষণীয়।

চিলমারী বন্দর

চিলমারী উপজেলায় অবস্থিত চিলমারী বন্দরটি উত্তরাঞ্চলের একমাত্র ভাসমান তেল ডিপো। এই বন্দরটি থেকে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে তেল সরবরাহ করা হয়।

সিন্দুরমতি দিঘি

চিলমারী উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নে অবস্থিত সিন্দুরমতি দিঘিটি একটি প্রাচীন দিঘি। এই দিঘিটির চারপাশে রয়েছে সুন্দর মনোরম দৃশ্য।

চাকির পশার বিল

চিলমারী উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নে অবস্থিত চাকির পশার বিলটি একটি বিশাল বিল। এই বিলে নানা প্রজাতির পাখি ও জলচর প্রাণী বাস করে।

ঘড়িয়ালডাঙ্গা বিল

চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নে অবস্থিত ঘড়িয়ালডাঙ্গা বিলটি একটি বিশাল বিল। এই বিলে নানা প্রজাতির পাখি ও জলচর প্রাণী বাস করে।

আমতলি সর্বজনীন দুর্গামন্দির

চিলমারী উপজেলার আমতলি ইউনিয়নে অবস্থিত আমতলি সর্বজনীন দুর্গামন্দিরটি একটি প্রাচীন মন্দির। এই মন্দিরটি তার স্থাপত্যশৈলীর জন্য বিখ্যাত।

আমতলি সর্বজনীন দুর্গামন্দির

চিলমারী উপজেলার আমতলি ইউনিয়নে অবস্থিত আমতলি সর্বজনীন দুর্গামন্দিরটি একটি প্রাচীন মন্দির। এই মন্দিরটি তার স্থাপত্যশৈলীর জন্য বিখ্যাত।

উষারাণীর বাড়ি (রাণীগন্জ)

চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নে অবস্থিত উষারাণীর বাড়িটি একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন। এই বাড়িটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রাণী উষারাণী।

রাজারঘাট (রাণীগন্জ)

চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নে অবস্থিত রাজারঘাটটি একটি ঐতিহাসিক স্থান। এই ঘাটটি তিস্তা নদীর তীরে অবস্থিত।

তিস্তা নদী

চিলমারী উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে তিস্তা নদী। এই নদীর তীরে অবস্থিত বাহারের ঘাট, মাটি কাটার মোড়, ভক্তিভিটের ঘাট, রাজারঘাট ইত্যাদি স্থান থেকে তিস্তা নদীর অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।